ডেস্ক রিপোর্ট/উখিয়া নিউজ টুডে।। বাংলাদেশে সম্প্রতি দুটি স্বল্পপরিচিত রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেয়ার পর প্রত্যাশী অন্য দলগুলো নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে, নির্বাচনের আগে আগে নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচন কমিশনের দাবি, যথাযথ যাচাই শেষে নিবন্ধন দেয়া না না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
যেসব দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়নি, তাদের আর নির্বাচন কমিশনে আপিল করার বা আগামী নির্বাচনের আগে আবার আবেদনের আর সুযোগ নেই।
বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই, সংস্থাটি স্বাধীনভাবে কাজ করে।
সামরিক সরকার সমর্থিত সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়েই প্রথম বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন শুরু হয়।
এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতীক অলিখিতভাবেই নির্ধারিত ছিল। মনোনয়ন দেয়ার পর সেই প্রতীকেই প্রার্থীরা নির্বাচন করতেন। নতুন রাজনৈতিক দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ হতো চাহিদা অনুযায়ী, কখনো কখনো লটারির মাধ্যমে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে নির্দিষ্ট প্রতীক নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে নিবন্ধন করার প্রথা চালু করা হয়। সেই সময় এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন বলেছিল, নিবন্ধিত না হলে কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন করতে পারবে না।
সেই সময়কার নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “মূল উদ্দেশ্য ছিল, একটা যোগ্যতা নিয়ে যেন রাজনৈতিক দলগুলোই নির্বাচনে অংশ নেয়। না হলে অর্থের অপচয় হয়, রাষ্ট্র যন্ত্র ব্যবহার হয়, এজেন্টরা বসতে পারে না, ব্যালটে অসংখ্য প্রতীক দিতে হয়, কিন্তু তাদের হয়তো এক পার্সেন্ট ভোটও পায় না। ফলে নির্বাচনের উপযুক্ত দলগুলোকে নিশ্চিত করতে এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল।”
শুরুর দিকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালুর বিরোধিতাও করেছিল বাম মোর্চা এবং ইসলামী ঐক্যজোটের মতো কিছু রাজনৈতিক দল, এর বিরুদ্ধে রিটও করা হয়েছিল। যদিও তাতে শেষ পর্যন্ত ঠেকানো যায়নি।
সেই বছর ১১৭টি আবেদন পড়লেও শর্তসাপেক্ষে ৩৯টি দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়।
এর প্রায় ১৫ বছর পরে সেই নিবন্ধন প্রক্রিয়াকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।
‘তাদের বিন্দুমাত্র নিরপেক্ষতা নেই’
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন সর্বশেষ দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে, যাদের খুব একটা পরিচিতি নেই। মোট ১২টি দলকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করেছিল নির্বাচন কমিশন, কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তথ্যে গরমিল থাকার কথা জানিয়ে বাকি ১০টি দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়নি।