টেকনাফের হ্নীলায় মাদ্রাসায় পড়ুয়া এক মেয়ে শিশু শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে মাদ্রাসা কক্ষে ধর্ষণের পর খুন করে লাশ উলঙ্গ অবস্থায় নর্দমায় ফেলে দিয়েছে। র্যাব ঘাতককে আটক করে হত্যাকান্ডের আলামত উদ্ধারের পর পুলিশে সোর্পদ করেছে। মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর এলাকায় চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।
২৮ জুলাই বিকাল ৪টারদিকে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর চৌকষ একটি আভিযানিক দল হ্নীলা আল জামেয়া দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় নুরানী বিভিাগে ৩য় শ্রেণী পড়ুয়া ফারিহা জান্নাত (৯) এর অপহরণে অভিযুক্ত মুফতি আলী আহমদের পুত্র মোঃ ইরফান (১৮) কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। পরে ধৃত ব্যক্তির স্বীকারোক্তিতে উক্ত মাদ্রাসার নালায় মাদ্রাসা ছাত্রী ফারিহার মৃতদেহ পাওয়া যায়। বিষয়টি টেকনাফ থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পরে র্যাব-পুলিশের উপস্থিতিতে ঘাতক ইরফান মেয়ে শিশুর লুকিয়ে রাখা কাপড় উদ্ধার করে দেন। রাত সাড়ে ৯টারদিকে পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য নিয়ে যায়।
গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যা পৌনে ৬টারদিকে ছানা উল্লাহ-জেসমিন দম্পতির মেয়ে ফারিহা জান্নাতকে অপহরণকারী চক্র তুলে নিয়ে যায়। পরে মায়ের নিকট ফোন করে ৫লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। অপহৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানা পুলিশকে রাতেই লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। এরপর র্যাব-পুলিশ উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এই পর সন্দেহভাজন ইরফানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বেরিয়ে আসে মেয়ে শিশু ফারিহা অপহরণ পরবর্তী নারকীয় ঘটনা। অপহৃত শিশুকে আল জামেয়া দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার ২২নং কক্ষে আটকে রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার সময় চিৎকার করলে ঘাতক ক্ষুদ্ধ হয়ে শিশুকে গলাটিপে খুন করে। খুনের ক্লু নিরুদ্দেশ করার জন্য ঐ শিশুর কাপড় খুলে পলিথিনে মুড়িয়ে কাঁদার মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়।
রাতেই কক্সবাজার র্যাব-১৫ অধিনায়ক ভারপ্রাপ্ত মেজর সৈয়দ শাফিকুল হক সংবাদ সম্মেলন করে এই লোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ দিয়ে ঘাতক ইরফানকে আটক করে থানা পুলিশে হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তবে কি কারণে এই ধরণের লোমহর্ষক ঘটনার সুত্রপাত তা নিয়ে জনমনে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা চলছে। হৃদয় বিদারক এই ঘটনার পর সাধারণ অভিভাবকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।