- নিজস্ব প্রতিবেদক।
উখিয়া পালংখালী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি সাবেক ইউপি সদস্য বকতার আহমদ প্রকাশ বকতার মেম্বার গুম হওয়ার চাঞ্চল্যকর রহস্যের অবশেষে জট খুলেছে। ঘটনার দীর্ঘ আড়াই বছরে বকতার মেম্বারকে র্যাব ১৫ গত ১৭/০৪/২০২২ ইং আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এর পর তাকে ১ বছর ৫ মাস ২ দিন গুম করে বন্দী শালায় শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন চালিয়ে আহত অবস্থায় মিথ্যা ইয়াবা পাচারের মামলা দিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় সোপর্দ করা হয়। যার মামলা নং জি. আর ১২৯/২০২৩ তারিখ ১৪/০৯/২০২৩।
এতে ক্ষান্ত হয়নি অসাধু র্যাব কর্মকর্তাগণ উক্ত বকতার মেম্বারকে ফিল্মী স্টাইলে অপহরণ পূর্বক তাকে ১ বছর ৫ মাস ২ দিন গুম করে রেখে কয়েক ধাপে মুক্তিপন আদায় করে। এছাড়া র্যাব কর্তৃক বিভিন্ন অভিযানে উদ্ধারকৃত ইয়াবা দিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় বকতার মেম্বারের স্ত্রী হালিমা আক্তার তার স্বামীর অপহরণ ও গুম সংক্রান্ত বিষয়ে গত ১৮/০৭/২২ ইং জেলা পুলিশ সুপার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় বরাবর (ডাইরী নং ৪৮১) আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে আরজি পেশ করেন। তাছাড়া বকতার মেম্বার গুম হওয়ার ঘটনা নিয়ে গত ৩১/১০/২০২৪ ইং তারিখে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারী নিকট(ফাইল নং ১৬২৪) আরও একটি অভিযোগ র্যাব ১৫ বিরুদ্ধে দাখিল করেন উক্ত বকতার মেম্বার। গুম কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, বকতার মেম্বারকে সম্পুর্ন পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আটকের পর দীর্ঘ দেড়বছর গুম করে রাখা ও তাকে ইয়াবা পাচারের মামলায় জড়ানোর ঘটনা মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামীকে বেখসুর খালাস প্রদান করেন।
এ প্রসঙ্গে বকতার মেম্বারের স্ত্রী হালিমা আক্তার বলেন, স্থানীয় একটি ষড়যন্ত্রকারী মহলের সাথে র্যাব ১৫ সদস্যদের মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আমার স্বামীকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও মানসম্মান ক্ষুন্ন এবং বিতর্কিত করার জন্য কারসাজির মাধ্যমে গুম করে পরবর্তীতে মুক্তিপণ নিয়ে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় সোপর্দ করে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় ও গুম কমিশনে আমার স্বামী অভিযোগ দাখিল করি। উক্ত অভিযোগ তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় বান্দরবান জেলা দায়রা জজ আদালত কর্তৃক আমার স্বামীকে বেখসুর খালাস প্রদান করেন। আমি র্যাব ১৫ ও স্থানীয় সন্ত্রাসী ভুট্টো ও তার অপরাপর সহযোগী এবং
র্যাব ১৫ এর অসাধু সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বকতার মেম্বার জানান, আমাকে র্যাব ১৫ উখিয়ারঘাট কাস্টমস এলপিজি গ্যাস পাম্পের পূর্ব পাশ থেকে আটক করে তাদের বন্দী শালায় নির্যাতন সেলে আটকে রেখে ১ বছর ৫ মাস পর তাদের নিকট রক্ষিত ইয়াবা দিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় সোপার্দ করে। আল্লাহ আমার সহায় থাকায় ও মানুষের দোয়ায় আদালত কতৃক মিথ্যা মামলা থেকে খারিজ করা হয়। আমি সংশ্লিষ্ট অসাধু র্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এবং স্থানীয় ষড়যন্ত্রকারীদের গডফাদার ভুট্টো বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে মামলা দায়ের প্রক্রিয়া চলছে। বান্দরবান জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সিনিয়র এডভোকেট মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, এ মামলা মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মুলক প্রমানিত হওয়ায় মাননীয় আদালত আসামী বকতার আহমেদকে বেখসুর খালাস প্রদান করেন।