ডেস্ক রিপোর্ট/উখিয়া নিউজ টুডে।। পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে কক্সবাজারের টেকনাফে মেরিন ড্রাইভের ভাঙন বড় হচ্ছে। নতুন করে আরও ৪-৫টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (০৪ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকায় সড়কের প্রায় ১৫০মিটার ভেঙে গেছে। ফলে সেখানকার প্রায় দুই হাজার পরিবার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর থেকে সড়কটিতে ভাঙন দেখা দেয়। এসময় ৬০মিটারের কাছাকাছি সড়ক ভেঙে গিয়েছিল। এসব ফাটল আজ আরও বড় হয়েছে। এদিকে সড়কের বিভিন্ন অংশে উপড়ে পড়া ঝাউগাছগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানান, উপকূলীয় বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা বশির আহমেদ খান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেরিন ড্রাইভের পূর্ব পাশে প্রভাবশালী অনেকে জমি কিনেছেন। তাঁদের কেনা জমি ভরাট করতে সড়কের পাশের সমুদ্রসৈকত থেকে অবাধে বালু তোলা হচ্ছে। এতে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ ছাড়া সড়ক রক্ষায় স্থাপন করা জিও ব্যাগগুলোও ফেটে যেতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতেও সড়কটির একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল।
রফিকুল ইসলাম নামের এক বাসিন্দা বলেন, এ ভাঙন রোধ করা না গেলে প্রায় দুই হাজার পরিবার হুমকিতে পড়বে। বন্ধ হয়ে যাবে চাষাবাদ। এখনই জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফের সাবরাং জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ৮০কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের একটি বিশেষ ইউনিট। শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার পর থেকে সড়কের ভাঙা স্থানে দুটি লম্বা জিও ব্যাগের মাটি ফেলার মাধ্যমে মেরামত কাজ শুরু করেছেন ওই ইউনিটের সদস্যরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙন দেখতে আশপাশের লোকজন মেরিন ড্রাইভে ভিড় করেছেন। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট থেকে হাদুরছড়া বিজিবি ক্যাম্পের কাছে শ্মশান পর্যন্ত ২ কিলোমিটারের সড়ক ও পাশের ঝাউবাগানে প্রায় ১৫টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের আঘাতে ঝাউগাছ উপড়ে ওই অংশের সড়কটি প্রস্থে অর্ধেক ভেঙে গেছে। ঢেউয়ের আঘাতে সড়কের কিছু অংশ সাগরে বিলীন হয়ে যাওয়ার দৃশ্যও চোখে পড়ে। সাগর উত্তাল থাকায় পাঁচ শতাধিক নৌকা সারিবদ্ধ করে সড়কের বিভিন্ন অংশে তুলে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেছে।এতে মেরিন ড্রাইভের সাবরাং বাহারছড়া ঘাট, হাদুরছড়া ও পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকার বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর কাজ করছেন।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সেলিম বলেন, ভাঙন দ্রুত ঠেকানো না গেলে টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে মেরিন ড্রাইভের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আজকের দিনের মাধ্যমে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে রাতে জোয়ারের আঘাতে সড়কটি বিলীন হয়ে যেতে পারে।